বিশেষ প্রতিনিধি ।পঙ্গু হয়েও জীবনের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে এক প্রতিবন্ধি ছামাদ ভাই।মহামারী করোনার ভিতরও বাদাম বিক্রয় করা বন্ধ নেই তার ।দীর্ঘদিন ধরে বাদাম বিক্রয় করে সংসার চালায় সে।দেখলে মনে হবে ১৪/১৫ বছর বয়সের ছেলে গাছ তলায় বসে বাদাম বিক্রয় করছে , বাস্তবে তার বয়স ৫০ বছরের উর্দ্ধে ।প্রতিদিন মনিরামপুর উপজেলার হেলাঞী হাসপাতাল মোড়ে বটতলায় বসে বাদাম বিক্রয় করতে দেখা যাই , এলাকার সবাই তাকে এক নামে ছামাদ ভাই বলে চিনে । কেজি খানেক বাদাম ছোট একটি পাল্লা নিয়ে প্রতিদিন বিকালে হাজির হয় বটতলায় , প্রতি রবিবার/বুধবার হেলাঞ্চী বাজারে বসতে দেখা যায়।কখনো গ্রামে কোন অনুষ্ঠান হলে সেখানে বাদাম নিয়ে এক কোনে বসে থাকতে দেখা যাই, তার এক পা একেবারে অচল। সে দুইটি লাঠির উপর ভর করে বাদামের প্যাকেট কাঁদে ঝুলিয়ে নিয়ে পথ চলে । ইতিপুবে ছামাদ ভাই আরো দুইটি কাজ করতো , সে লোকের বাড়ি বাড়ি গবাদী পশুর জন্য বিচালী কেটে দিয়ে পয়সা উপজন করতো, সে সাথে মহিলাদের আরবী পড়াত তাতে তার নিজের দুমুঠে ভাতের ব্যবস্থা হয়ে যেত। বিগত ১০ বছর পুর্বে থেকে বিচালী কাটা মেশিন গ্রামে এলে তার উপর্জন বন্ধ হয়ে যাই।বেছে নেয় বাদাম বিক্রয় করার পথ।বতমান বাদাম বিক্রয় করে তার একমাত্র আয়ের পথ , ছামাদের কাছ থেকে জানা গেছে ১২ বছর বয়সে তার বাবা মারা গেছে,তারপর ১৪ বছর বয়সে তার মা মারা গেছে , সে মা বাবাকে হারিয়ে এতিম অসহায় হয়ে পড়ে ,সে পরিবারের বোঝা হয়ে দাড়ায়।তারপর সে পুঙ্গুত্ব অবস্থায় বিয়ে করে , বতমান তার ১ ছেলে এক মেয়ে নিয়ে কষ্ঠে জীবন যাপন করছে। এমন পুঙ্গু ব্যাক্তির ভিক্ষা করার কথা ,জীবনের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে সে ।তার এ পুঙ্গুত্ব বিষায় জানতে চায়লে তার এক চাচা আঃ বারিক এর কাছ থেকে জানা যাই ছামাদ ভাইয়ের পুঙ্গুত্বের পিছনে রয়েছে এক অবাক করা কাহিনী, সে জন্মের পর কোন পুঙ্গু ছিল না ,কিছুদিন পর তার পায়ে সামান্য সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে ,তাতে করে বহু ডাঃ কবিরাজ দেখাই কোন ফল হয়নি ।অবশেষে কেশবপুর উপজেলার মান্দারভাঙ্গা নামক স্থানে এক ফকিরের দরগায় মানত করে ,ওই সময় ওয়াদা করে ছিল তার পা ভালো হলে ফকিরের দরগায় একটি খাসি ছাগল দিয়ে মানোদ দিবে,ওই সময় একটি খাসিও কিনে রাখে , তারপর থেকে সে ক্রমায়নে ভালো হয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলাফেরা করতে থাকে এর মধ্যে ওই খাসি অনেক বড় হয়ে ওঠে।এ সময় পরিবারের লোকের ওই খাসি ছাগলের উপর লোভ এসে যাই,তারা বড় খাসি বিক্রয় করে একটি ছোট খাসি ক্রয় করে , সেই খাসি দিয়ে মানদ পরিষোধ করে ,তাতেই অমঙ্গল ডেকে আনে। এক মাস না হতে ছামাদ পুনরায় পুঙ্গু হতে শুরু করে,পুনরায় তারা ওই দরগায় যেয়ে কান্নাকাটি করে কোন ফল পায়নি।যদিও মিডিয়া কোন ফকির বা দরগাহ বিশ্বাস করে না তারপর সামাদের জীবনে যেটা ঘটেছে সেটা বাস্তব ।সেই থেকে সে পুঙ্গুত্ব নিয়ে জীবনের সাথে যুদ্ধ করে যাচ্ছে।তিনি সরকার ও হৃদয়বানদের কাছে একটি হুইল চেয়ার দাবি করেছেন।