১। Al Janoub Stadium ( Al Warkah Stadium ).
২। Khalifa International Stadium.
৩। Education City Stadium.
৪। Al Bayt Stadium.
৫। Al Rayyan Stadium.
৬। Al Tamuma Stadium.
৭। Stadium 974 (Ras Abu Abound Stadium).
৮। Lusail Icoinic Stadium.
Al Janoub Stadium আগে আল ওয়ারকাহ স্টেডিয়াম নামে পরিচিত ছিল। স্টেডিয়ামটি আল ওয়ারকাহ তে অবস্থিত এবং দুহা থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত। এটির বক্ররেখার ছাদ যা দেখতে ধো-নৌকার পাল থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিল। উপরিউক্ত ডিজাইনের কারণে দর্শকদেরএকটি জাহাজে থাকার অনুভূতি দেয় । গরম ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে শীতল ব্যবস্থা স্টেডিয়ামের অতিরিক্ত গরম হতে বাধা দেয়।ক্রীড়া কমপ্লেক্সে একটি বহুমুখী কক্ষ, সুইমিং পুল ,স্পা এবং সবুজ ছাদ সহ একটি শপিং সেন্টার রয়েছে এবং এই স্টেডিয়ামে একটি স্কুল, বিবাহের মহল,সাইকেল চালানো, ঘোড়ায় চড়া, রানিং ট্র্যাক, রেস্টুরেন্ট,মার্কেটপ্লেস, জিম এবং পার্কল্যান্ড হল কিছু নতুন সুযোগ-সুবিধা যা আল জানুব স্টেডিয়ামের সাথে তৈরি করা হচ্ছে। এর কন্সট্রাকশনের কাজ ২০১৬ সালে শুরু হয় এবং কাজ শেষ হয় অফিসিয়ালিভাবে ২০১৯ সালে মে মাসে। ২০১৯ সালে আমির কাপের ফাইনাল এবং ২০২০ সালে AFC Champion লিগের ফাইনাল আয়োজন করা হয়েছিল। তাছাড়া ফিফা আরব কাপ ২০২১ এর সময় স্টেডিয়ামটিতে ছয়টি ম্যাচ আয়োজন করা হয়েছিল।এর ধারণক্ষমতা ৪০,০০০ যা বিশ্বকাপের পর অর্ধেক (২০,০০০ ধারণক্ষমতা) করা হবে বাকি ২০,০০০ ধারণক্ষমতা সরিয়ে ফুটবল উন্নয়ন প্রকল্পে দান করা হবে। এই স্টেডিয়ামে ২০২২ বিশ্বকাপের মোট ৭ টি ( গ্রুপ পর্বের ৬টি ও রানারআপ এর) খেলা হবে।
Al Tamuma Stadium হাম্মাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কয়েক মিটার দূরে এবং দুহা থেকে ৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত । এই স্টেডিয়াম দেখতে গোলাকৃতি মত , এর ডিজাইন আরবের ঐতিহ্যবাহী তাকিয়াহ টুপি থেকে অনুপ্রনিত হয়ে করা হয়েছে। এর কন্সট্রাকশনের কাজ ২০১৭ সালে শুরু হয় ও কাজ শেষ হয় অফিসিয়ালি ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে এবং আমির কাপ ফাইনাল উপলক্ষে ২০২১ সালে অক্টোবর মাসের ২২তারিখে স্টেডিয়ামের উদ্বোধন অনুষ্ঠিত হয়। এই স্টেডিয়ামে ৪০,০০০ জন বসার ধারন ক্ষমতা করা হয়েছে ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২২ উপলক্ষে কিন্তু বিশ্বকাপ শেষে ধারন ক্ষমতা কমিয়ে ২০,০০০ আসন করা হবে এবং বাকি ২০,০০০ আসনগুলো সরিয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দান করা হবে। ফুটবল ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২২ এর মোট ৮ টি ( গ্রুপ পর্বের ৬ টি , রাউন্ড অফ ১৬ এর ১ টি এবং কুয়ার্টার ফাইনালের ১ টি ) ম্যাচ খেলা হবে।
Khalifa International Stadium টি দুহা থেকে ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। স্টেডিয়ামের পশ্চিম দিকে একটি ছাদ আবৃত এবং পূর্ব দিকে একটি বড় খিলান রয়েছে, যা ২০০৬ এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সময় থেকে আতশবাজি শুরু করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল। স্টেডিয়ামটি মূলত ১৯৭৬ সালে নির্মিত হয় তখন ২০,০০০ আসন সংখ্যা ছিল পরে ২০০৬ এশিয়ান গেমসের জন্য নতুন করে সংস্করণের কাজ ও প্রসারিত করে ৪০,০০০ আসন সংখ্যা করা হয়। আবার ২০১৪ সালে ফুটবল ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ২০২২ এর জন্য নতুন করে কন্সট্রাকশনের কাজ শুরু করা হয় এবং ২০১৭ সালে অফিসিয়ালি কাজ শেষ হয়। । ২০২২ সালে কাতার ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের সিদ্ধান্তের পর, স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা 68,000-এ উন্নীত করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, কিন্তু সেই পরিকল্পনাটি পূণরায় সংশোধন করে ৪০,০০০ আসনে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে।এই স্টেডিয়ামে ২০২২ বিশ্বকাপের মোট ৮ টি(গ্রুপ পর্বের ৬টি, রাউন্ড অফ সিক্সটিন এর ১টি ও থার্ড প্লেসের )ম্যাচ খেলা হবে।
Education City Stadium টি আল রাইয়ানে কাতার ফাউন্ডেশনের এডুকেশন সিটিতে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে অবস্থিত। দুহা থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। এর ডিজাইন ডিম্বাকৃতি যা দেখতে জ্যাগড হীরার মত সেই কারণেস্টেডিয়ামটিকে মরুভূমির হীরা নামে ডাকা হয়। এর কন্সট্রাকশনের কাজ ২০১৬ সালে শুরু হয় ও কাজ শেষ হয় অফিসিয়ালি ২০২০ সালের জুন মাসে।৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে অফিসিয়াল ম্যাচের আয়োজন করে হয় স্টেডিয়ামটিতে, যা ২০২০-২০২১ কাতার স্টারস লিগের মৌসুম খেলা হয়েছিল। ২০২০ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডের একটি ম্যাচ, তৃতীয় স্থনের নির্ধারণীর ম্যাচ এবং ফাইনাল খেলা , চ্যাম্পিয়ান লিগের পূর্ব ও পশ্চিম অঞ্চলের ম্যাচগুলো এই স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। ফিফা আরব কাপ ২০২১ এর সময় স্টেডিয়ামটি ৫ টি ম্যাচআয়োজন করে। এই স্টেডিয়ামে ৪০,০০০ জন বসার ধারন ক্ষমতা করা হয়েছে। ফিফা বিশ্বকাপের পর, স্টেডিয়ামটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাথলেটিক দলগুলির ব্যবহারের জন্য 25,000 আসন ধরে রাখবে।অন্যান্য স্টেডিয়ামের মত উন্নত শিতল প্রযুক্তি খেলোয়াড় এবং অনুরাগীদের জন্য সারা বছর আরামদায়ক তাপমাত্রা নিশ্চিত করে। প্রতিবন্ধি অনুরাগীদের অ্যাক্সেস অসাধারন। যারা বেশি আরামদায়ক চাচ্ছেন তাদের জন্য ভিআইপি এলাকা থেকে খেলা উপভোগ করতে পারবেন। এই স্টেডিয়ামের পাশে অনেক সবুজ স্থান রয়েছে যা পরিবেশকে সুন্দর করে তুলেছে। এই স্টেডিয়ামে ২০২২ বিশ্বকাপের মোট ৮টি ( গ্রুপ পর্বের টি, রাউন্ড অফ সিক্সটিন এর ১টি এবং কোয়ার্টার ফাইনালের ১টি ) ম্যাচ খেলা হবে।
Al Bayt Stadiumটি Al khor শহরের মধ্যথেকে ৩ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এবং দুহা থেকে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।এটি দেখতে রেক্টেঙ্গুলারআকৃতি, এর ডিজাইন অঞ্চলের যাযাবর জনগণের ঐতিহ্যবাহী তাঁবু থেকে অনুপ্রনিত হয়ে করা হয়েছে । এর কন্সট্রাকশনের কাজ ২০১৫ সালে শুরু হয় ও কাজ শেষ হয় অফিসিয়ালি ২০১ সালে। এই স্টেডিয়ামে ৬০,০০০ জন বসার ধারন ক্ষমতা করা হয়েছে। ফিফা আরব কাপ ২০২১-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৩০ নভেম্বর, ২০২১ তারিখে স্টেডিয়ামটির উদ্বোধন হয়েছিল। এই স্টেডিয়ামে ২০২২ বিশ্বকাপের মোট ৯ টি (গ্রুপ পর্বের ৬টি, রাউন্ড অফ ১৬ এর ১টি ও কুয়ার্টার ফাইনালের ১ টি এবং সেমিফিনালের ১ টি ) ম্যাচের খেলা হবে।
Lusail Iconic Stadium টি লুসাইল এলাকায় অবস্থিত যা দুহা থেকে ২৩ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। কাতার বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি চোখ থাকবে স্টেডিয়ামের দিকে,কারণ এই স্টেডিয়ামটি কাতারের সবচেয়ে বৃহত্তম স্টেডিয়াম এবং ফাইনাল খেলা হোস্ট করা হবে। এর নকশা আলো এবং ছায়ার পারস্পারিক ক্রিয়া দ্বারা অনুপ্রণিত। এর কন্সট্রাকশনের কাজ ১১ এপ্রিল ২০১৭ সালে শুরু হয় এবং ২০২১ সালের ২২ নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয়। অন্যান্য স্টেডিয়ামের মত এই স্টেডিয়ামটিতে সৌরশক্তি ব্যবহার করে ঠান্ডা করা হবে এবং একটি শুন্য কার্বন ফুট প্রিন্টথাকবে।এর ধারণক্ষমতা ৮০,০০০ যা বিশ্বকাপ ২০২২ এর সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়াম এটি। বিশ্বকাপ পর ৪০,০০০ করা হবে আশা করা হচ্ছে, বাকি ৪০,০০০ আসনগুলো অপসারণ করে স্কুল, দোকান, ক্যাফে, খেলাধুলার সুবিধা এবং সাস্থ্য ক্লিনিক সহ একটি কমিউনিটি স্পেসে রুপান্তরিত হবে। স্টেডিয়ামের বাহিরের সবুজ প্রকৃতি মানুষকে বিশেষভাবে আকর্ষিত করবে।
স্টেডিয়ামে প্রথমত তিনটি প্রীতি ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল কিন্তু নির্মাণ কাজের দেরি হওয়ায় কারণ পরবর্তিতেএই স্টেডিয়ামে মোট ১০ টি ( গ্রুপ পর্বের ৬টি, রাউন্ড অফ সিক্সটিন এর ১ টি, কুয়ার্টার ফাইনালের ১ টি এবং ফাইনাল ) ম্যাচের খেলা হবে।
Al Rayyan Stadium টি আহমদ বিন আলী স্টেডিয়াম নামে পরিচিত। এটি আল রাইয়ানে এবং দুহা থেকে ২০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। এর আকৃতি দেখতে রেক্টেংগুলার এর মত স্টেডিয়াম জেলার প্রতিটি অংশ স্থায়িতের কথা মাথায় রেখে ডিজাইন করা হয়েছে।
কাতারে আল রাইয়ান একটি বহুমুখী স্টেডিয়াম, এটি বর্তমানে বেশিরভাগ ফুটবল মাচের জন্য ব্যবহিত হয়। ১৯৬০ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত কাতারের আমির আহমদ বিল আলি নামে স্টেডিয়ামটির নামকরন হয়। ২০০৩ সালে নির্মিত প্রাক্তন স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা ২১,২৪২ ছিল, পুরানো স্টেডিয়ামে শেষ ম্যাচ ২০১৪ সালে হয়েছিল এবং ২০১৫ সালে ভেঙ্গে ফেলা হয়। ২০১৬ সালে প্রথম দিকে নতুন করে কাজ শুরু হয় যা আল রাইয়ান স্টেডিয়াম পরিচিত এবং ধারন ক্ষমতা বৃদ্ধ্বি করে ৪০,০০০ আসন করা হয়।
স্টেডিয়ামটি ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ সালে উদ্ভোধন হয়েছিল। ফিফা আরব কাপ ২০২১ এর সময় স্টেডিয়ামটিতে ৪টি ম্যাচের আয়োজন করেছিল। বিশ্বকাপ ২০২০ এর পর ধারণক্ষমতা ২০,০০০ আসন কমিয়ে আনা হবে, যা বিদেশে ফুটবল উন্নয়ন প্রকল্পগূলিতে অপসারণ করা হবে। সমস্ত আসন ছায়াযুক্ত করা হয়েছিল।
এই স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপ ২০২২ এঁর মোট ৭টি ( গ্রুপ পর্বের ৬টি এবং রাউন্ড অফ সিক্সটিন এর ১টি ) ম্যাচের খেলা হবে।
স্টেডিয়াম ৯৭৪ এর পূর্বে রাস আবু আবুদ স্টেডিয়াম নাম ছিল। এটি দুহাতে ৩ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। ২০ নভেম্বর ২০২১ সালে একটি লঞ্চ ইভেন্টের সময় ভেনুটিকে অনুষ্ঠানিকভাবে স্টেডিয়াম ৯৭৪ নামকরন করা হয়। এটি ফিফা বিশ্বকাপের ইতিহাসের প্রথম অস্থায়ী ভেনু , এটি ওয়াটারফ্রন্ট সাইনে নির্মিত কাতারের আন্তর্জাতিক ডায়াল ( +৯৭৪ ) এর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে স্টেডিয়াম ৯৭৪ টি পূর্ণবেবহত শিপিং কন্টেনার অন্তর্ভুক্ত। ২০২০ বিশ্বকাপের পর এটি ভেঙ্গে দেওয়া হবে।এর কন্সট্রাকশনের কাজ ২০১৮ সালে শুরু হয় এবং ২০২০ সালে অফিসিয়ালি কাজ শেষ হয়। ৩০ নভেম্বর ২০২১ সালে ২০২১ ফিফা আরব কাপের উদ্ভোধন দিনে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সিরিয়ার মধ্যে প্রথম ম্যাচের আয়োজন সহ ৫টি ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছিল। ২০২২ বিশ্বকাপের মোট ৭টি (গ্রুপ পর্বের ৬টি এবং রাইন্ড অফ সিক্সটিন এর ১টি ) ম্যাচের খেলা হবে।